শনিবার, ০২ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:২৬ পূর্বাহ্ন
কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলায় চিকিৎসার কথা বলে নিজের ১৪ দিন বয়সী শিশু কন্যাকে কোলে করে বাড়ি থেকে নিয়ে যান ফারুক মিয়া। কিন্তু ডাক্তার না দেখিয়ে মেয়েকে ৭০ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেন তিনি। আর সেই টাকা উড়িয়ে দেন জুয়া খেলে।
মেয়ে হারিয়ে গেছে বলে মিথ্যা প্রচারণা চালিয়ে ঘটনা অন্য দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি।অবশেষে শিশুটির মায়ের প্রচেষ্টায় বেরিয়ে আসে জুয়ারি বাবার অবাক করা কাণ্ড। উদ্ধার করা হয় শিশুটিকে। গ্রেফতার করা হয় বাবা ফারুকসহ শিশুটির ক্রেতা জাকিয়া নামে এক নারীকে।
গত সোমবার (১৮ নভেম্বর) এমন ঘটনা হলেও মিডিয়ার নজরে আসে তিন দিন পর। গত বুধবার (২০ নভেম্বর) কটিয়াদী উপজেলার মসূয়া গ্রাম থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করে মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেয় পুলিশ। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
ঘটনার পরদিন রিনার কাছে খবর আসে ফারুক ও তার কয়েকজন আত্মীয় মিলে রাধিয়াকে বিক্রি করে দিয়েছেন। গত মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) কটিয়াদী মডেল থানায় ঘটনায় জড়িতদের শিশুটির বাবা, দাদি রেহেনা খাতুন ও তাদের আত্মীয় জসিম ভূঞাসহ অজ্ঞাত কয়েক জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা গেছে, কটিয়াদী উপজেলার বালিরারপাড় এলাকার মৃত শাহাব উদ্দিনের ছেলে ফারুক ভুইয়ার সঙ্গে একই ইউনিয়নের রামদী গ্রামের মো. ফরিদ ভূঞার মেয়ে মোছা. রিনা খাতুনের বিয়ে হয় ১৫ বছর আগে। তাদের সংসারে এক ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে। গত ৫ নভেম্বর তাদের জন্ম নেয়া শিশু সন্তানের নাম রাখা হয় রাধিয়া।
মামলা দায়ের করার পর দিন পুলিশ ফারুক ও জাকিয়াকে গ্রেফতারসহ শিশুটিকে উদ্ধার করে। একই দিন আদালতের নির্দেশে শিশু রাধিয়াকে মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিয়ে দুই আসামিকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।
কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী মডেল থানা পুলিশের ওসি এম এ জলিল বাংলা নিউজডেকে জানান, নিজের শিশু সন্তানকে বিক্রি করে ফারুক ভূঞা ৭০ হাজার টাকা পেয়েছিল। এক রাতেই জুয়া খেলে তিনি পুরো টাকাই শেষ করে দেন। জুয়ার নেশায় পড়েই সে এমন নির্মমতার পথ বেছে নিয়েছিল বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে।
তিনি আরও জানান, আসামিদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫ দিন করে রিমান্ডের আবেদন করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কটিয়াদী থানা পুলিশের এসআই মো. মোস্তফা কামাল। শনিবার (২৩ নভেম্বর) রিমান্ড আবেদনের শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।