সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৪৫ অপরাহ্ন
বাংলা নিউজডে আন্তর্জাতিক ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রে কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েড হত্যকাণ্ডের পর শুরু হওয়ার বর্ণাবাদবিরোদী বিক্ষোভ থেকে অভিযোগ ওঠে বর্ণবাদী প্রচারণা সংক্রান্ত পোস্টে লাগামহীন স্বাধীনতা দেয় ফেসবুক। এরপর ইউনিলিভারের মতো বহুজাতিক কোম্পানিসহ শতাধিক কোম্পানি ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দেওয়া বন্ধ করায় বিপুল ক্ষতির মুখে মার্ক জাকারবার্গ।
বড় অংকের বিজ্ঞাপনদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো একযোগে বিজ্ঞাপন প্রদান বন্ধ করায় এক ধাক্কায় ৭২০ কোটি ডলার সম্পদমূল্য হারিয়েছেন ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী মার্ক জাকারবার্গ। ইউনিলিভারের পক্ষ থেকে ফেসবুকে বিজ্ঞাপন বন্ধের খবর প্রকাশ্যে আনতেই শুক্রবার ফেসবুকের শেয়ার ৮.৩ শতাংশ দরপতন হয়।
শেয়ারের মূল্য পতনের কারণেই ফেসবুক মোট ৫ হাজার ৬শ কোটি ডলারের বাজারমূল্য হারায়। গত তিন মাসের মধ্যে জনপ্রিয় এই সোশ্যাল মিডিয়া জায়ান্টটির এটাই ছিল সর্বোচ্চ দরপতনের ঘটনা। শুধু বিজ্ঞাপন বন্ধ নয় ফেসবুকের সম্পদেও নিজেদের বিনিয়োগ বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছে ইউনিলিভার।
কোম্পানির শেয়ারের এই দরপতনের ধাক্কা এসে পড়েছে মার্ক জুকারবার্গের মোট সম্পত্তির পরিমাণেও। ব্লুমবার্গ বিলিওনিয়ার ইনডেক্সে এ মুহূর্তে বিশ্বের শীর্ষ দশজন ধনীর তালিকায় জাকারবার্গের অবস্থান চতুর্থ। দরপতনের কার লুই ভুঁটোর মালিক বার্নার্ড আরনল্ট জাকারর্বাগকে পেরিয়ে তালিকায় তিনে উঠে এসেছেন।
ফেসবুকের প্রধান নির্বাহীর মোট সম্পদ ৭ দশমিক ২১ বিলিয়ন কমে এখন ৮২ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। তবে শীর্ষ ধনীর তালিকায় প্রথম ও দ্বিতীয় স্থানটি বরাবরের মতোই যথাক্রমে অ্যামাজনের জেফ বেজোস এবং মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটসের দখলেই আছে।
তবে গণহারে বিজ্ঞানপন দাতা কোম্পানিগুলোর এমন বয়কটের পর সংবাদ মূল্য বিবেচনায় এখন থেকে যে কোনো পোস্টে ‘সম্ভাব্য ক্ষতিকারক’ লেবেল সেঁটে দেওয়ার ঘোষণা দেয় ফেসবুক। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পোস্টসহ প্ল্যাটফর্মটিতে কীভাবে বিষয়বস্তু নিয়ন্ত্রণ করা তা নিয়েই মূলত চাপে পড়েছিল ফেসবুক।
বিবিসি এ খবর দিয়ে বলছে, সোশ্যাল মিডিয়া জায়ান্টটির বিরুদ্ধে বিষয়বস্তু নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত নানান অভিযোগ ওঠার পর মোট ৯০টিরও বেশি বিজ্ঞাপনদাতা কোম্পানি তাদের বিজ্ঞাপন প্রদানের প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ফেসবুক বয়কট করে। এরপর ফেসবুক কর্তৃপক্ষ চাপে পড়েই এমন সিদ্ধান্ত নিল।
শুক্রবার ফেসবুকের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী জাকারবার্গ এক ফেসবুক লাইভে বলেন, রাজনীতিবিদদের যেসব পোস্ট সংবাদযোগ্য তাতে এখন থেকে ‘সম্ভাব্য ক্ষতিকারক’ লেবেল সেঁটে দেওয়া হবে। ট্রাম্পের নাম না নিলেও সম্প্রতি ট্রাম্পের ফেসবুক পোস্ট নিয়ে শুরু হওয়া বিতর্ককে বড় কারণ হিসেবে ভাবা হচ্ছে।
টুইটার কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যেই ট্রাম্পের উসকানিমূলক টুইটে নিয়মিতই নানা লেবেল সেঁটে দেওয়া শুরু করেছে। বিভ্রান্তিমূলক তথ্য ও বিদ্বেষ ছড়ানো ছাড়াও নানা কারণে টুইটার তাদের নীতি মেনে এমন কাজ করে থাকে। কিন্তু ফেসবুকের ক্ষেত্রে এমনটা না দেখা যাওয়ায় শুরু হয় বিতর্ক ও সমালোচনা।
ফ্লয়েড হত্যাকাণ্ডের পর বিতর্ক আরও জোরালো হয়। দেশটির নাগরিক সংগঠনগুলো ‘ঘৃণা ছড়ানোর বিনিময়ে মুনাফা বন্ধ করো’ এমন নানা স্লোগানে এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়। এরপর থেকে বিজ্ঞাপনদাতা কোম্পানিগুলো একে একে বিজ্ঞাপন প্রদান বন্ধ করে দিলে চাপে পড়ে যায় ফেসবুক।
বিজ্ঞাপন প্রদান বয়কট করার এই তালিকায় শুক্রবার যুক্ত হয় বহুজাতিক ভোগ্যপণ্য উৎপাদনকারী কোম্পানি এবং বিশ্বের সবচেয়ে কাঙ্ক্ষিত বিজ্ঞাপনদাতা প্রতিষ্ঠান ইউনিলিভার। যুক্তরাষ্ট্রে ‘মেরুকরণের এই নির্বাচনকালীন সময়কালের’ কথা বিবেচনায় এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করে কোম্পানিটি।
আমেরিকা, বাংলাদেশ এবং বিশ্বের সর্বশেষ খবরের জন্য বাংলা নিউজডের ওয়েবসাইটে আসুন এবং আমাদের Bangla Newsday ফেসবুক পৃষ্ঠাটি সাবস্ক্রাইব করুন।