শুক্রবার, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ১১:২৭ পূর্বাহ্ন
অতিসম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে আদালতের সেরেস্তা রেখা রানী দাসের প্রকাশ্যে ঘুষ চাওয়ার ভিডিও ব্যাপক ভাবে সারা ফেলে। এ নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়াসহ সারা দেশে ব্যাপক ভাবে সমালোচনা দেখা দেয়। এবার তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে।গতকাল রোববার বরিশাল দ্রুত বিচার আদালতের সেরেস্তা সহকারী রেখা রানী দাসকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন সরকারি কৌঁসুলি আইনজীবী একেএম জাহাঙ্গীর।
আইনজীবী একেএম জাহাঙ্গীর বলেন, আদালতের সেরেস্তা রেখা রানী দাসের প্রকাশ্যে ঘুষ চাওয়ার ভিডিওটি গত শুক্রবার ভাইরাল হয়। এর পর তা বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। শুক্র ও শনিবার আদালত বন্ধ থাকায় তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। তাই সাপ্তাহিক ছুটির পর রোববার আদালত খুললে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।রেখা গত চারদলীয় জোট সরকারের সময় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে অফিস সহায়ক (পিওন) পদে চাকরিতে যোগ দেন। পরে দুই দফায় পদোন্নতি পেয়ে পর্যায়ক্রমে প্রসেস সার্ভার ও সেরেস্তা সহকারী হন।
জানা যায়,বরিশাল ঝালকাঠির নলছিটির বাসিন্দা মনির হোসেন সম্প্রতি একটি মামলায় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে জামিন আদেশের (বেলবন্ড) নকল কপি তোলার জন্য নিয়ম অনুযায়ী কোর্ট ফিসহ আবেদন করেন। এ সময় সংশ্লিষ্ট ট্রাইব্যুনালে নকল জামিন আদেশ পাওয়ার জন্য যোগাযোগ করলে বরিশাল জজ আদালতে সেরেস্তা রেখা রানী দাস প্রকাশ্যে ঘুষ না দিলে কাজ করবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন।সেরেস্তা সহকারী রেখা রানী দাস তার কাছে এক হাজার টাকা দাবি করেন। কিন্তু মনির টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করে বিষয়টি তার মোবাইলে ধারণ করেন। পরে তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছেড়ে দেন।
ঘুষের বিনিময়ে কাজ করে দেয়ার সেই ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক ভাবে সারা ফেলে। এই ভিডিওতে দেখা যায়, একজন ব্যক্তি নকল ওঠাতে বরিশাল জজ আদালতে গেছেন। তখন সেখানে দায়িত্বরত নারী সেরেস্তা সহকারী তার কাছে দাবি করেন এক হাজার টাকা। সে সময় ওই ব্যক্তি বলেন, আমি নিয়ম অনুযায়ী টাকা দিয়ে আবেদন করেছি। আপনাকে কি কারণে এক হাজার টাকা দেব? সে সময় ওই নারী নকল ওঠাতে আসা ব্যক্তিকে বলেন, আপনি কাগজ নেবেন, আর টাহা দেবেন।আপনি টাহা দেবেন না, কাগজও পাবেন না। আপনে আপনার উকিল-মুহুরি লইয়া আহেন। আপনের লগে আর কোনো কথা নাই।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই ভিডিও প্রকাশ হওয়ার পর তা নিয়ে বরিশালজুড়ে ব্যাপক ভাবে সমালোচনা দেখা দেয়। এই বিষয়টি নিয়ে অনেকে নানা রকম কথা বলতে থাকেন। এছাড়া অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। অনেকে বলেন, আদালতে ঘুষ এখন মনে হয় একটি বিধিবদ্ধ নিয়ম।